চুল পড়া রোধে করনীয়

নারীর সৌন্দর্যবর্ধনে চুলের গুরুত্বপূর্ণ কতটুকু তা সকলেরই জানা।আবহাওয়া ও জলবায়ুগত কারনে বিভিন্ন দেশের মানুষের চুলের ধরন ভিন্ন হয়ে থাকে।আমাদের দেশে নারী ও পুরুষের চুলের বৈশিষ্ট্য অন্যান্য দেশের থেকে কিছুটা ভিন্ন।চুল আল্লাহর এক অশেষ দান। চুলের যত্নে করণীয় সম্পর্কে জানা নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ। একজন চুলহীন ব্যাক্তিই জানে চুল না থাকার কেমন যন্ত্রনা।

আজকে আমরা জানবো কিভাবে চুলের যত্ন নিলে নারী পুরুষ উভয়েরই চুল হবে শক্ত,দীর্ঘস্থায়ী এবং কিভাবে কমানো যাবে চুলের খুসকি, কিভাবে বন্ধ করবেন চুল পড়া ।এছাড়াও  চুলের সামগ্রিক যত্ন ।

চুল পড়া রোধে করনীয়-২০২২

  1. অতিরিক্ত প্রোটিন খান। প্রতিদিন পর্যাপ্ত প্রোটিন না পেলে আপনার চুলের বৃদ্ধি প্রভাবিত হতে পারে।
  2. ভিটামিন জাতীয় খাবার গ্রহণ করুন।
  3. ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্য অনুসরণ করার চেষ্ঠা করুন।
  4. ওভার-দ্য-কাউন্টারে চুল পড়ার ওষুধ ব্যবহার করুন।
  5. নিচু-স্তরের লেজার লাইট থেরাপি ব্যবহার করতে পারেন।
  6. চুল ভালো রাখতে মাথার ত্বকের যত্ন নিন।
  7. নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করা
  8. কেমিক্যাল জাতীয় পন্য চুলে কম ব্যবহার করা
  9. ধুলাবালি থেকে চুলকে দূরে সরিয়ে রাখা

চুল পড়া রোধে অ্যালোভেরার প্রাকৃতিক ব্যবহার -২০২২

অ্যালোভেরার গুনাগুন সম্পর্কে আমাদের সকলের ধারনা রয়েছে।চুল পড়া বন্ধে অ্যালোভেরা বেশ কার্যকরী।সদ্য সংগ্রহ করা অ্যালাভেরা থেকে প্রাকৃতিক উপায়ে জেল সংগ্রহ করে এটিকে চুল এবং মাথার ত্বকে লাগিয় ৫-৭ মিনিট ধরে ম্যাসেজ করতে থাকুন।ম্যাসেজ করা শেষ হলে চুলকে তোয়ালে কিংবা গামছা দিয়ে ২৫-৩০ মিনিট ধরে জড়িয়ে রাখুন।অতপর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে নিয়ে তাতে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন।এতে করে আপনার চুল পড়া রোধের পাশাপাশি চুলে খুসকিও কমে যাবে। বহুকাল ধরে চুল পড়া রোধে এই টুটকা ব্যবহার হয়ে আসছে।

চুল পড়া রোধে পেঁয়াজের রস

রান্নার কাজে ও মুখরোচক খাবার তৈরিতে পেঁয়াজে ব্যবহার আছে এটা জানলেও অনেকের কাছে অজানা যে চুল পড়া বন্ধ করে পেঁয়াজ কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।পেঁয়াজ থেকে রস সংগ্রহ করে সেটা চুলের গোড়ায় লাগিয়ে দিলে এই রস চুল পড়া বন্ধ করতে বড় ভূমিকা পালন করর।তবে অবশ্যই সংগ্রহ করা পেঁয়াজের রস ১৫-২০ মিনিট লাগিয়ে রাখতে হবে।

চুল পড়া রোধে নিম পাতার রস

তেতো নিমপাতার হাজারো গুন তা সকলেরই জানা।অনেক রোগের মহাষৌধ হিসেবে নিম পাতা সর্বজনীন পরিচিতো।কিন্তু এই নিমপাতার রস মানুষের চুল পড়া বন্ধের পাশাপাশি নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে থাকে।যে কেউ চাইলেই ৩০-৪৫ দিনের মধ্যে অনেকাংশে চুল পড়া বন্ধ করতে পারবেন এই নিমপাতা ব্যবহারের মাধ্যমে। এর জন্য আপনাকে প্রথমে গাছ থেকে নিমপাতা সংগ্রহ করে ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। সংগ্রহ করা পাতা ভালোভাবে পেষ্ট করে ব্যবহার উপযোগী করতে হবে।তারপর পেষ্টগুলোকে পুরো মাথায় লাগিয়ে দিতে হবে। পেষ্ট লাগানোর পর চুলগুলোকে কমপক্ষে ২৫-৩০ মিনিট শুকাতে দিন।অতপর হালকা গরম পানি দিয়ে পুরো চুল ভালো করে ধুয়ে নিন।নিমপাতার রস চুলের গোড়া শক্ত ও মজুবত রাখতে সহায়তা করে থাকে।

চুলের খুশকি কমাবেন কিভাবে

যদি মাথায় হালকা খুশকি থাতে তাহলে, প্রথমে চুলের জন্য ব্যবহার উপযোগী তেল এবং ত্বকের কোষ গঠন কমাতে একটি শ্যাম্পু দিয়ে নিয়মিত পরিষ্কার করার চেষ্টা করুন। যদি এটি সাহায্য না করে, একটি ঔষধযুক্ত খুশকি শ্যাম্পু চেষ্টা করুন। এতেও যদি আপনার খুশকি না নিয়ন্ত্রনে না আসে তাহলে নিম্নের প্রাকৃতিক পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করুন

চুলের খুশকি কমাতে আমলকীর রস

আমলকীর রস এককভাবে চুলের খুশকি দূর করতে ভূমিকা রাখে।এছাড়াও আমলকীর সাথে বিভিন্ন উপাদান সংযুক্ত করে চুল পড়া রোধও করা যায়।চুলে খুশকি কমাতে প্রথমে আমলকী সংগ্রহ করে ভালোভাবে ধুয়ে নিন।তারপর আমলকী থেকে রস সংগ্রহ করে তেলের ন্যায় মাথার চুলে লাগিয়ে নিন।এভাবে কয়েকদিন ব্যবহার করলে চুলের খুশকি অনেকটাই দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।

চুলের খুশকি কমাতে মেহেদী পাতা ও চা পাতার মিশ্রনের ব্যবহার

সেই প্রাচীন কাল থেকেই মেহেদী পাতা চুলের যত্নে ব্যবহার হয়ে আসছে।আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ও মেহেদী পাতার ব্যবহার করতেন।মেহেদী পাতার রস এককভাবেও চুলের জন্য

অধিক গুরুত্বপূর্ণ।মেহেদী পাতা চুল ঘন ও শক্ত রাখতে সহায়তা করে। এছাড়া মেহেদী পাতা ও চা পাতা একত্রে ব্যবহার করে চুলের খুশকি দূর করা যায়।মেহেদী পাতা ও চা পাতা একত্রে বেঁটে তা মাথায় লাগিয়ে রাখলে খুশকি দূর হয়ে যায়।

চুলের খুশকি কমাতে লবণের ব্যবহার

চুলের বিরক্তিকর খুশকি কমাতে লবনের যে যাদুকরী ব্যবহার রয়েছে তা অনেকেরই অজানা।আমরা শুধু খাওয়ার কাজেই লবণ ব্যবহারে সীমাবদ্ধ থাকলেও খুব সহজে লবণ ব্যবহার করে খুশকি কমিয়ে ফেলতে পারি।এজন্য প্রথমে হালকা করে লবন ব্যবহার করে চুলে স্যাম্পু করতে হবে।খুশকি ভরা চুল থেকে রক্ষা পেতে লবনের এরুপ ব্যবহার আপনাকে সর্বাধিক প্রশান্তির পাশাপাশি স্মার্ট হতে সহায়তা করবে।

চুল সিল্কি করবেন কিভাবে-২০২২

একটি পাকা কলা থেকে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে টুকরা টুকরা করে নিন।কলা চুলকে লম্বা করার পাশাপাশি মোলায়েম করে।কলায় প্রচুর পরিমানে কার্বোহাইড্রেড,প্রাকৃতিক তেল ও ভিটামিন থাকে যা চুলকে ঝলমলে করে।চুলকে দ্রুত উজ্জ্বল করতে কলা খুব দ্রুত কাজ করে।েএবার কলার টুকরো গুলো ব্লেন্ড করে নিন এবং ব্লেন্ড করা কলা ঘন আকার ধারন করবে।এবার এর সাথে এক চা চামচ মধু ও এক চা চামচ নারিকেল তেল ভালো করে মিশিয়ে নিন।মধুতে রয়েছে প্রাকৃতিক হোমেক্টেন ও এন্টিঅক্সিডেন্ট যা চুল ভেঙাগে যাওয়া বন্ধ করে।মধুও চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে থাকে।এছাড়াও চর্মরোগ ও খুশকি দূর করে।নারিকেল তেল হেয়ার কন্ডিশনাল হিসেবে কাজ কার করে থাকে।নিয়মিত নারিকেল তেল ব্যবহার করলে চুল দ্রুত বড় হয়।এবার এই হেয়ার প্যাকটি আপনার চুল ও চুলের গোড়ায় লাগান।লাগানোর পর ১ ঘন্টা রাখতে হবে।১ ঘন্টা পর ভালো স্যাম্পু দিয়ে ভালো করে পরিষ্কার করে নিন।এই হেয়ার  প্যাকটি চুল সফট ,সিল্কি ও গ্লোয়ি হতে সহবয়তা করে। এটি মুহূর্তের মধ্যে চুল সুন্দর করে।এ হেয়ার প্যাকটি সপ্তাহে দুইদিন ব্যবহার করুন।

চুলের উকুন সমস্যা ও তা দূর করার উপায়-২০২২

মানব চুলে বসবাসকারী উকুন হ্চ্ছে একটি পরজীবি জীব । যা প্রতিনিয়ত মাথায় চলাচলের মাধ্যমে একধরনের বিরক্তর ও অসহ্যকর অবস্থা তৈরি করে থাকে ।

সাধারনত যেসব লক্ষনে বুঝতে পারবেন মাথায় উকুন জন্মেছে

সাধারনত মাথায় উকুন হলে উকুনের হাটাচালার কারনে চুলকানি বেড়ে যায়।অনেক সময় চামড়ায় ক্ষতের সৃষ্টি হয় যা পরবর্তিতে ঘায়ের কারন হয়।

উকুন দূর করতে রসুন ও শসার ব্যবহার

উকুন সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই রসুন ও শসার ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে যা অনেকটাই সফল পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহার হয় আসছে।প্রথমে কিছু রসুনের কোয়া থেকে খোসা ছাড়িয়ে নিয়ে তাকে ভালোভাবে পেষ্ট করে নিন। এতে রসুনের পেষ্টের পরিমান ভেদে শসার রস যোগ তাকে ভালোভাবে মিশিয় নিয়ে মাথায় চুলের প্রতিটা অংশে লাগিয়ে নিন।এ অবস্থায় চুলকে ভালোভাবে শুকিয়ে নিন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে পুরো চুল ধুয়ে নিন।এভাবে মাসে কয়েকবার ব্যবহার করলে আস্তে আস্তে উকুনের পরিমান কমে আসবে।  

উকুন দূর করতে লেবুর রসের ব্যবহার

লেবুকে উত্তম জীবানুনাশক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। লেবু হচ্ছে এসিড জাতীয় একধরনের ফল।লেবুর রয়েছে বহুবিধ ব্যবহার। এই লেবুর রস আমাদের মাথার ক্ষতিকর উকুন দূর করার কাজর ব্যবহার করা হয়ে থাকে।লেবু থেকে সরাসরি রস বের করে নিয়ে তা মাথায় লাগিয়ে রাখতে হবে। এভাবে ২০-৩০ মিনিট রেখে দেয়ার পর চিরুনি দিয়ে মাথায় আচড়ানো দিলে উকুন বের হয়ে আসবে।এ পদ্ধতি টি আমরা কয়েকদিন পর পর এপ্লাই করতে পারি।

Post a Comment

Previous Post Next Post